অংকন জুলিয়া | মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০২০ | পড়া হয়েছে 706 বার
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রতিনিয়ত সংবাদের শিরোনাম হতে দেখা যাচ্ছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে।
মাদক ব্যবসা ও অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়তই খুনোখুনি হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
২০১৮ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১০০ জন রোহিঙ্গা। তার মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সংখ্যা প্রায় ৬৮ জন।
সীমান্ত অঞ্চলে মিয়ানমারের ভিতরে ইয়াবার কারখানা আছে ৪০টি। এছাড়া ‘ইউনাইটেড ওয়া স্টেইট আর্মি’ নামে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী সংগঠনেরও চারটি কারখানা রয়েছে।
কারখানাগুলোতে তৈরি ইয়াবা মিয়ানমারভিত্তিক ১০ জন ডিলার বাংলাদেশের এজেন্টদের কাছে পৌঁছে দেয়।
আর এইসব মাদক প্রথমে মিয়ানমারের সিন্ডিকেট হয়ে রোহিঙ্গাদের হাতে আসে। তারপর বাংলাদেশের মাদক ব্যবসায়ীরা তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়।
প্রশ্ন উঠেছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এই কারখানাগুলো বন্ধ করছে না কেন? তারা কি প্রমাণ করতে চায় যে রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও মানব পাচারকারী?
মিয়ানমার এটি প্রমাণ করতে পারলে মাদক, মানবপাচার ও জঙ্গিবাদের অভিযোগে তাদের অভিযুক্ত করা যাবে।
এর ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অস্বীকার করা যাবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশকে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের মদদদাতা হিসেবেও অভিযুক্ত করা যাবে।
সেই চেষ্টা তারা ক্রমাগত করে যাচ্ছে। একদিকে তারা মাদকের যোগান বৃদ্ধি করছে অন্যদিকে সেই মাদক বিক্রির অভিযোগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি করছে।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে শুধু ৮ মাসেই ৫ কোটি ১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। যা ২০১৬ সালে উদ্ধার হয়েছিল দেড় কোটি ইয়াবা।
মাদক পাচারের অভিযোগে ২০১৮ সালে মিয়ানমার মামলা করেছিলো ৭৯ টি। কিন্তু গত তিন বছরে ৭৩১টি। আসামী করা হয়েছে ১ হাজার ৬৭১ জন রোহিঙ্গাকে।
অর্থাৎ মাত্র এক বছরেই জ্যামিতিক হারে বেড়েছে অপরাধের সংখ্যা।
এসব বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়েই বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকটের কৌশল-পাল্টা কৌশল নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
নতুন করে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অনেকটা একাই লড়ছে বাংলাদেশ।শুরুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ চীন ও আমেরিকা ব্রিটেন বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিলেও তার কিছুদিন পরেই নীরব থাকার নীতি গ্রহণ করে।
তাই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুটি নিয়ে এখন আর কেউ সরব হচ্ছেনা বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশকে এ বিষয়ে অবহিত করলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ চীন ও ভারত।
বাংলাদেশ সময়: ৯:২৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর ২০২০
জাপানের প্রথম অনলাইন বাংলা পত্রিকা | pr placid